চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে শুক্রবার কয়েদিরা বিদ্রোহ করেছেন।
এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারারক্ষীরা রাবার বুলেটে ও ফাঁকা গুলি ছোড়েছেন।
এ ঘটনায় কয়েকজন কয়েদি আহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে খবর পাওয়া গেছে।
কারাগারটিতে সেনাবাহিনীর অবস্থানের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
দুপুর পৌনে দুইটা থেকে এ অস্থিরতা শুরু হয়। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সেটা স্থায়ী হয়।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে গেটের দায়িত্বে থাকা আক্তার বলেন, ‘দুপুরে নামাজের পর হঠাৎ কারাগারের একাধিক ভবনে কয়েদিরা বিদ্রোহ শুরু করেন। আমাদের পক্ষ থেকে ফাঁকা গুলি করা হয়েছে।
‘কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে শুনেছি। আমাদের অনেক কারারক্ষী আহত হয়েছেন।’
লালদিঘীর পার এলাকার বাসিন্দারা জানান, কেন্দ্রীয় কারাগারে ব্যাপক গুলির শব্দ শোনা যায়। বাইরে থেকেও কিছু মানুষ কারাগারের ফটক ভাঙার চেষ্টা করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নামাজের পর হঠাৎ কারাগারের ভেতর থেকে বিকট আওয়াজ ও গোলাগুলির শব্দ আসে। ওই সময় লালদীঘির চারপাশে রাস্তাঘাটে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
মো. ফারুক নামের আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘কারাগারের ভেতরে গুলির আওয়াজ শুনে কারা গেটে এসেছিলাম। তখন গেট বন্ধ ছিল।’
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ফটকে দায়িত্বরত আরেক কারারক্ষী বলেন, ‘দুপুরে নামাজ পড়া শেষে হঠাৎ কারাগারের একাধিক ভবনে কয়েদিরা বিদ্রোহ শুরু করেন। আমাদের পক্ষ থেকে ফাঁকা গুলি করা হয়েছে। ভেতরে কারারক্ষীদের সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করতে পারিনি।
‘বিদ্রোহ দমনে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হয়। ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়েছে সেনাবাহিনী। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’
চট্টগ্রামের জেল সুপার মঞ্জুর হোসেন বলেন, ‘জুমার নামাজের পরে কিছু কয়েদি বিদ্রোহ করে বিক্ষোভ করে। কারাগারে পাগলা ঘণ্টা বাজানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের পক্ষ থেকে ফাঁকা গুলি করা হয়। এখন পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
‘কতজন আহত হয়েছেন, তা এখনও বলা যাচ্ছে না। কারাগারের ভেতরে সেনাবাহিনী রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সবসময় কারাগারে সেনাবাহিনী রাখার অনুরোধ জানিয়েছি।’
চট্টগ্রাম কারাগারের ডেপুটি জেলার মো. ইব্রাহিম বলেন, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কারাগারে সেনাবাহিনী ও বিজিবি পৌঁছেছে।
‘একজন বন্দিও পালাতে পারেনি। এ ঘটনা কেন ঘটেছে, সেটি আমরা যাচাই-বাছাই করে দেখছি।’
এর আগে গত ৫ আগস্ট বিকেলে কেন্দ্রীয় কারাগারে হামলার চেষ্টা করা হয়। ওই সময় পুলিশ ও কারারক্ষীরা হামলা প্রতিরোধ করেন।
বর্তমানে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ৪ হাজারের বেশি বন্দি রয়েছে।
কারাবন্দিদের জন্য নির্মিত পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ভবনের প্রতিটির ধারণক্ষমতা ৩০০ জন। সাঙ্গু, কর্ণফুলী ও হালদা ভবনের প্রতিটিতে বন্দি ধারণক্ষমতা ২৪০ জন।